নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিক থেকে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ‘মডেল’ উল্লেখ করে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেছেন, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনের দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি অর্জন অনেক চ্যালেঞ্জিং, তারপরও বিগত অর্থবছরে বাংলাদেশ ৮ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এেেত্র বাংলাদেশ এখন গোটা বিশ্বে মডেল।
গত ২৪ জুলাই রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ২ দিনব্যাপী ‘গুড প্রজেক্ট ইমপ্লেমেন্টেশন ফোরাম’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মনমোহন প্রকাশ একথা বলেন। আগামীতে যোগাযোগ খাতে এডিবি বাংলাদেশের জন্য আরও সহায়তা বাড়াতে চায় বলেও জানান তিনি।
এডিবির প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার ঋণে দেশে বিভিন্ন ধরনের ৫৩টি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন ৫৩ জন প্রকল্প পরিচালক (পিডি)। তাদের দতা ও স্বচ্ছতার ওপর প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি অনেকটাই নির্ভর করে। আর এ কাজে যেসব পিডি দতা দেখাচ্ছেন, তাদের পুরস্কৃত করে এডিবি। মোট ১০টি ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, ইন্দোনেশিয়া. নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় এডিবির অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ৩০০ কর্মকর্তা ২ দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে মনমোহন প্রকাশ বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৯০৯ ডলার। অথচ ১৯৭২ সালে ছিল মাত্র ৩১৮ ডলার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ নানা েেত্র সফলতা পাচ্ছে। অর্থনীতির অনেক েেত্র চালকের আসনেও রয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে তৈরী পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ দ্বিতীয়, সবজি রপ্তানিতে তৃতীয়, ধান উৎপাদনে চতুর্থ আর আম উৎপাদনে সপ্তম স্থানে রয়েছে।
গত দশকে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার অর্ধেক কমেছে উল্লেখ করে এডিবি’র বাংলাদেশ পরিচালক বলেন, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সফলতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের গড় আয়ু দণি এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে নারীদের গড় আয়ু অনেক বেশি। আগামীতে বাংলাদেশের যোগাযোগ খাতে আরও সহায়তা বাড়াতে চায় এডিবি। এেেত্র সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে রেল যোগাযোগ। কেননা তুলনামূলকভাবে রেল অধিক ব্যয়সাশ্রয়ী ও নিরাপদ বাহন।
তিনি জানান, বাংলাদেশের প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি বেড়েছে। অর্থ ছাড়ও বাড়ছে। এডিবি ইতোমধ্যেই বাড়তি সহায়তা দিচ্ছে।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অতিথি, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, দেশের নদী ও খালগুলো দূষণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটি অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এসব নিয়েও দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে অন্যান্য দেশের তুলনা করলে হবে না। এটি ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশ। এত মানুষের জন্য খাদ্য সরবরাহ করাটাই আগে প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল। কিন্তু এখন সে অবস্থা নেই। বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে সফলতার স্বাক্ষর রেখে দেশের চাহিদা মিটিয়ে খাদ্য রপ্তানি শুরু করেছে।
