এরশাদের ঘন ঘন সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে জাপায় ফের অস্থিরতা Posted on

 এম নিজাম উদ্দিন : সম্মেলনের ঠিক আগ মুহূর্তে হঠাৎ ৮ জন প্রেসিডিয়াম সদস্য করায় জাতীয় পার্টিতে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় একজন এমপিসহ আরও দুই শীর্ষ নেতা দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন। দলের একাধিক পর্যায়ের শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জিএম কাদেরকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়ার পর থেকেই জাপার রওশনপন্থিরা কোণঠাসা অবস্থায় আছেন। এ নিয়ে দলে নতুন করে গৃহদাহ শুরু হয়েছে। রওশনপন্থি নেতাদের বক্তব্য হলো পরিকল্পিতভাবে একটি পক্ষ দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে নতুন করে পদায়ন শুরু করেছে। জিএম কাদের বলছেন, যোগ্য ব্যক্তিদের প্রাপ্য সম্মান দেয়া হচ্ছে। যারা মাটি ও মানুষের জন্য রাজনীতি করেন তারাই মূল্যায়ন পাবেন। উড়ে এসে জুড়ে বসা নেতৃত্ব বেশিদিন টিকে থাকতে পারে না।


৯ মে সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই জাপায় ৮ জন প্রেসিডিয়াম সদস্য করার খবর আসে। দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ স্বাক্ষরিত বার্তায় নতুন প্রেসিডিয়ামের তালিকায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী, দুইজন এমপি, একজন সাবেক ছাত্রনেতা ও ব্যবসায়ীও রয়েছেন। গণমাধ্যমে পাঠানো এরশাদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পার্টির গঠনতন্ত্রে ২০/১/ক ধারা মোতাবেক এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে। জাপার নতুন শীর্ষ নেতাদের মধ্যে রয়েছেন কাজী মামুনুর রশিদ (ব্যবসায়ী), সৈয়দ দিদার বখত (সাবেক মন্ত্রী), জাফর ইকবাল সিদ্দিকী (সাবেক এমপি), নাজমা আকতার এমপি, আব্দুস সাত্তার মিয়া, আলমগীর সিকদার লোটন (সাবেক ছাত্রনেতা), এমরান হোসেন মিয়া এবং মেজর রানা মোহাম্মদ সোহেল (অব.) এমপি।

জানা গেছে, মূলত জাতীয় যুব সংহতির সভাপতি আলমগীর সিকদার লোটনকে প্রেসিডিয়াম সদস্য করায় ক্ষুব্ধ হন লিয়াকত হোসেন খোকা। সম্প্রতি খোকাকে প্রেসিডিয়ামের পদ থেকে বাদ দেয়া হয়। খোকা ও লোটনের বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। দু’জনই একই সংসদীয় আসনে জাপার প্রার্থী হয়েছিলেন। ৯ মে নতুন প্রেসিডিয়ামের তালিকা দেখে জাপার সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সভাপতি লিয়াকত হোসেন খোকা গণমাধ্যমে পাঠানো বার্তায় বলেন, শীর্ষ নেতৃত্বের অযোগ্যতার প্রতিবাদে তিনি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।

নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের এ সাংসদ বলেন, আমি জাপার একজন সাধারণ কর্মী। জাতীয় পার্টির জন্মলগ্ন থেকে আছি। বর্তমান দলের নেতৃত্বের ওপর আমার কোনো আস্থা নেই। এরশাদের অসুস্থ অবস্থায় একটি মহল পার্টির ভেতর যেভাবে প্রমোশন দিচ্ছে তা মেনে নেয়া যায় না।

তবে খোকার পদত্যাগপত্র এখনও গৃহীত হয়নি। জানা গেছে, জাপায় রওশনপন্থি হিসেবে পরিচিত লিয়াকত হোসেন খোকা। তিনি এমপি হওয়ার পর পার্টির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছেন রওশনের সহযোগিতায়। একই কায়দায় মনোনয়ন নিয়ে এমপিও হয়েছেন দু’দফা। দলে একটি পক্ষ মনে করে লিয়াকত শীর্ষ নেতৃত্বের যোগ্য নন। তাই তাকে বাদ দিয়ে একজন যোগ্য ব্যক্তিকে প্রেসিডিয়ামের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। জাতীয় পার্টির আগে প্রতিষ্ঠিত হয় যুব ও ছাত্র সংগঠন। সেই নতুন বাংলা ছাত্রসমাজের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ছিলেন লিয়াকত হোসেন খোকা। পরে জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় কমিটি ও যুব সংহতির শীর্ষপদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার এই পদত্যাগের বিষয়টি টক অব দ্য পার্টিতে পরিণত হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় পার্টির (জাপা) ৪১ সদস্যের প্রেসিডিয়ামের সভায় আগে থেকেই রয়েছে ৪৬ জন। ৯ মে নতুন করে আরও ৮ জনকে পদোন্নতি দেয়ায় তা ৫৪তে গিয়ে ঠেকল। এ বিষয়ে হোসেন খোকা বলেন, ত্যাগী নেতাকর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন করা উচিত। আরও স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রমোশন দেয়া উচিত ছিল। স্যারের (হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ) অসুস্থতার সুযোগে একটি চক্র দলটাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

একই ঘটনায় দলের যুববিষয়ক যুগ্ম সম্পাদক আবু সাঈদ স্বপন সন্ধ্যার পর পদত্যাগ করেন। অসম প্রমোশনের কারণে এ পদত্যাগ বলে জানান তিনি। বলেন, দেখেন কাদের প্রমোশন দেয়া হয়েছে! আর তো মেনে নেয়া যায় না। আরো অনেকে পদত্যাগের লাইনে আছেন। এছাড়া যুববিষয়ক সম্পাদক বেলাল হোসেনও পদত্যাগ করেছেন।

রওশনপন্থিরা বলেছেন, জাতীয় পার্টির ভেতরে গণতন্ত্র বলতে কিছুই নেই, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কথাই শেষ কথা। তিনি যখন যাকে খুশি শোকজ-বহিষ্কার করেন, যখন যাকে খুশি প্রমোশন দেন। গঠনতন্ত্রে সেই পদ থাকুক আর না-ই থাকুক, তাতেও কিছুই যায় আসে না। একই ব্যক্তিকে এক মাসের ব্যবধানে দু’বার প্রমোশন দিয়েছেন এরশাদ। পার্টিতে যোগদানের আগেই সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদ প্রেসিডিয়ামের সদস্য করা হয়েছে, এমন হাস্যকর নজিরও রয়েছে জাপায়।

অবশ্য পার্টির গঠনতন্ত্রেই এরশাদকে অনেকটা স্বেচ্ছাচারী ও নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। ২০ এর উপধারা (১) বলা হয়েছে, ‘গঠনতন্ত্রের অন্যধারায় যাহাই উল্লেখ থাকুক না কেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত থাকবেন। এ ক্ষমতাবলে তিনি প্রয়োজন বোধে প্রতিটি স্তরের কমিটি গঠন, পুনর্গঠন, বাতিল, বিলোপ করতে পারবেন। তিনি যেকোনো পদ সৃষ্টি বা অবলুপ্ত করতে পারবেন। চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির যেকোনো পদে যেকোনো ব্যক্তিকে নিয়োগ, যেকোনো পদ থেকে যেকোনো ব্যক্তিকে অপসারণ ও যেকোনো ব্যক্তিকে তার স্থলাভিষিক্ত করতে পারবেন।’

দলের নেতারা বলছেন, যারা যখন এরশাদের কাছাকাছি থাকেন তখন গঠনতন্ত্রে দেয়া দলের চেয়ারম্যানের একক ক্ষমতাবলে তাদের মতাদর্শের লোকদের প্রমোশন বা বহিষ্কার এমনকি গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।

জিএম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যান করা হয় ২০১৬ সালে জানুয়ারি মাসে। তখন গঠনতন্ত্রে এই পদ ছিল না। রংপুরের এক জনসভায় ছোট ভাই জিএম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যান ঘোষণা দেন এরশাদ। এর অল্পদিনের মাথায় রওশনপন্থিদের চাপে রওশনকে সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান করা হয়। সেই পদও কিন্তু গঠনতন্ত্র মোতাবেক ছিল না। পরে কাউন্সিলে (১৪ মে, ২০১৬) গঠনতন্ত্রের সংশোধনী এনে সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও কো-চেয়ারম্যান পদ সংযোজন করা হয়।

তবে নিরপেক্ষ নেতারা বলছেন, জাপায় কখন কার প্রমোশন হয়, আর কখন কাকে বহিষ্কার করা হয় তারও কোনো ঠিকঠিকানা নেই। স্ত্রী রওশন এরশাদ ও ছোট ভাই জিএম কাদেরও এই শোকজের হাত থেকে রক্ষা পাননি। কাউন্সিলের বাইরে গিয়ে কয়েক বছরে তিন দফায় শুধু মহাসচিব পদেই রদবদল করেছেন।

এরশাদের স্বেচ্ছাচারী এই মনোভাবের কারণে জাপা এখন বহুভাগে বিভক্ত। এরশাদের নেতৃত্বে মূলধারা জাপাসহ জাতীয় পার্টি জেপি, বিজেপি ও জাতীয় পার্টি (জাফর) নামে চারটি ধারা সক্রিয়। দু’টি ধারা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটে, দু’টি ধারা বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত রয়েছে। আবার অনেকে লাঙ্গল ছেড়ে ধানের শীষ ও নৌকার হাল ধরেছেন।

জাপার বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, কমিটির মেয়াদ শেষ। চলতি বছরের মধ্যে নতুন কাউন্সিল হওয়ার কথা রয়েছে। দলের ভেতরে এজন্য প্রস্তুতিও চলছে।

জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনিই দলটির মূল কা-ারি, তার নির্দেশেই চলে দলের কার্যক্রম। কিন্তু সম্প্রতি তিনি বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছেন। এ জন্য প্রায়ই তাকে হাসপাতালে শয্যাশায়ী থাকতে হয়। সঙ্গত কারণেই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন জেগেছে, এরশাদের অবর্তমানে কে হবেন দলের মূল কা-ারি? কার নির্দেশে চলবে দলের নেতাকর্মীরা? এর উত্তরে যে ক’জনের নাম ঘুরপাক খায় তারা হলেন জাপার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান ও এরশাদের ছোট ভাই গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের এবং দলের বর্তমান মহাসচিবের নাম। কিন্তু গত কয় বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, এ তিনজনের মধ্য থেকে এরশাদ তার বিকল্প কা-ারি বাছাই করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন, ভুগছেন নানা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে। ‘শ্যাম রাখি না কুল রাখি’ দশা। ফলে দুদিন পরপরই আগের নেয়া সিদ্ধান্ত পাল্টে যাচ্ছে। আজ যাকে বলা হচ্ছে দলের পরবর্তী কা-ারি, কালই হয়ত তাকে ছুড়ে ফেলে নতুন কারও নাম ঘোষণা করা হচ্ছে। দুদিন পর আবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন। কদিন পর ফের।

জাপায় বেশ কয় বছর ধরেই চলছে এ রাখা না-রাখার খেলা। এদিকে ঘন ঘন সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারণে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে এক ধরনের চাপা ক্ষোভ। তারা হতাশও। সম্প্রতি ফের এ ইস্যুতে জাপায় চলছে নানামুখী কথাবার্তা, চলছে কাদা ছোড়াছুড়িও। এবারের রাখা না-রাখার খেলার কেন্দ্রে আছেন জিএম কাদের। এরশাদের অবর্তমানে পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের।

এরশাদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নিজের অবর্তমানে বা চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিদেশে থাকাকালীন দলের কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের জাপার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। এ নিয়ে দলটির নেতৃবৃন্দের মধ্যে ইতোমধ্যেই কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু হয়ে গেছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও এরশাদ অসুস্থ হয়ে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন থাকাকালে ছোট ভাই জিএম কাদেরকেই দলের পরবর্তী কা-ারি ঘোষণা করেছিলেন। এ সিদ্ধান্তকে পার্টির সাংগঠনিক সিদ্ধান্তবহির্ভূত বলে মন্তব্য করেছেন জাপা মহাসচিব। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি কোনো পারিবারিক বিষয় নয় যে, একজন মারা গেলে তার উত্তরসূরী দায়িত্ব নেবে।

জাপা মহাসচিব বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা এরশাদ সাহেবের যতক্ষণ পর্যন্ত একটি নিশ্বাসও আছে, ততক্ষণ উনিই চেয়ারম্যান হিসেবে থাকবেন। উনার অবর্তমানে আমরা কী করব, তা বাংলাদেশে আমাদের যত কর্মী রয়েছেন এবং যতগুলো জেলা রয়েছে, সব জেলা-উপজেলা পর্যায়ে যত কমিটি আছে, আমরা একটা সাধারণ সভা করব; সাধারণ সভা করে আমরা দলের পরবর্তী চেয়ারম্যান নির্ধারণ করব। এ হলো দলের নিয়ম, গঠনতন্ত্রের সিস্টেম।

গত ২২ মার্চ পার্টির কো-চেয়ারম্যান পদ থেকে জিএম কাদেরকে সরিয়ে দেন এরশাদ। পরদিন সংসদে বিরোধী দলের উপনেতার পদ থেকেও তাকে সরিয়ে দেয়া হয়। এর প্রতিবাদে ২৭ মার্চ রংপুরে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দলের চেয়ারম্যানের ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আন্দোলনের ঘোষণা দেন রংপুর সিটি করপোরেশনের (রসিক) মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। আন্দোলনের মুখে ৪ এপ্রিল ফের জিএম কাদেরকে বহালের আশ্বাস দেন এরশাদ।

এরশাদের ঘন ঘন বিপরীতমুখী সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়ে জাপার এক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এমপি বলেন, রংপুরের কয়েকজন নেতাকর্মী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে অনেকটা জিম্মি করে জিএম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যান পদে পুনর্বহালে বাধ্য করেন।

রংপুর মহানগর জাপা সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির তা প্রত্যাখ্যান করে বলেন, বৃহত্তর রংপুরের মাটি ও মানুষ এরশাদের প্রাণের স্পন্দন। আমরা চাই জাতীয় পার্টি বেঁচে থাকুক। কিন্তু দলের ভেতর একটি কুচক্রী মহল জিএম কাদেরসহ পার্টির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আমরা এরশাদকে জিম্মি করিনি। ষড়যন্ত্রকারীরাই এরশাদকে ভুল বুঝিয়ে পার্টিকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এরশাদই আমাদের তার বাসভবনে ডেকে নিয়েছিলেন।

গত বছরের ৩ ডিসেম্বর জাপা মহাসচিবের পদ থেকে বিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে নতুন মহাসচিব করা হয় মসিউর রহমান রাঙ্গাকে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তি নিয়ে বাণিজ্য ছাড়াও ঋণখেলাপির অভিযোগ ওঠায় রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরানো হয় বলে দায়িত্বগ্রহণের পর এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন রাঙ্গা। মসিউর রহমান রাঙ্গাকেও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যপদ থেকে একাধিকবার বাদ দিয়ে পুনরায় ফিরিয়ে আনা হয়।

২০১৬ সালের ৩ ডিসেম্বর পার্টির মহাসচিব পদ থেকে জিয়াউদ্দিন বাবলুকে বাদ দিয়ে এবিএম রহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তখন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে দল থেকে বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয় বাবলুর বিরুদ্ধে। চারদলীয় জোটে যোগ দেয়ার পর জাতীয় পার্টি ছাড়তে হয়েছিল কাজী জাফর ও কাজী ফিরোজ রশীদকেও। প্রায় এক যুগ আগে কাজী ফিরোজ রশীদ পুনরায় জাতীয় পার্টিতে আসেন। গত একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে বিভিন্ন পর্যায়ের বেশ কজন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। অনেকে পদত্যাগও করেন। নির্বাচনের পর পুনরায় সবাইকে দলে ফিরে এসে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান এরশাদ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ